বাংলােদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজার সাত জনের।নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৫৫৭ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৫২ হাজার ১৭৮ জনে।
মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৭৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন দুই লাখ ৬০ হাজার ৭৯০ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০২টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৪ হাজার ২৪৪টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ১৬৪টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৪৮৭টি।
এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার হার ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৩ দশমিক শূন্য ৫ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪২ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২৮ জনের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও নারী ১১ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিভাগে ১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে চার জন, খুলনা বিভাগে তিন জন। এছাড়া রাজশাহী, সিলেট ও রংপুর বিভাগে এক জন করে তিন জন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালেই মারা গেছেন ২৮ জন।
মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ছয় জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে সাত জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এক জন, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে এক জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ২৬১ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩৩৩ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন ৭৯ হাজার ৫৫৪ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৬৩ হাজার ২২৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৩৩০ জন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এর একদিন আগে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) দেশে আরও ১ হাজার ৭০৫ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়।এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৪০ জন মারা যান।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৬ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৮২ হাজার ২৭০ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার ২২ জন।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, ২ লাখ ৪ হাজার ৫০৬ জন। বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যাও এই দেশটিতে। এ নিয়ে ৭০ লাখ ৪৬ হাজার ২১৬ জন এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় এবং মৃতের সংখ্যায় তৃতীয় অবস্থানে আছে ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ১০৫ জন। এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৮ হাজার ৯৬৫ জন।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় তৃতীয় এবং মৃতের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৩ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ জন।
করোনায় মৃতের দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে আছে মেক্সিকো। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৩ হাজার ৬৯৩ জন। আর এ পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ৭ লাখ ৫৮০ জন।
আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে আছে রাশিয়া। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১১ লাখ ৯ হাজার ৫৯৫ জন। আর মৃতের সংখ্যা ১৯ হাজার ৪৮৯ জন।
সুস্থতার দিক থেকেও প্রথম অবস্থানে উঠে এসেছে ভারত (৪৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭২০ জন), দ্বিতীয় অবস্থানে নেমে গেছে যুক্তরাষ্ট্র (৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৫২৫ জন), এবং তৃতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল (৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ১৯৯ জন)।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৫টি দেশে ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।