মহামারি করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্লাজমা দিতে গিয়েছিলেন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। এ সময় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যেখানে বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এ সরকার সামরিক সরকার না, তার চেয়েও খারাপ। তারা কারও কথা শুনতে রাজি নয়।
বুধবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের গণস্বাস্থ্য প্লাজমা সেন্টার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডা. জাফরুল্লাহ।
তিনি বলেন, সরকার নিজেদের যা ইচ্ছা তাই করছে। আমি মার্চ মাসে বলেছি, করোনার জন্য ভেন্টিলেটরের চেয়ে বেশি প্রয়োজন অক্সিজেন। অক্সিজেনের পর্যাপ্ত সাপ্লাই আছে কিনা দেখেন। আমরা দেখেছি, করোনা রোগীরা অক্সিজেনের জন্য মূলত হাসপাতালে ভর্তি হয়। অনেকগুলো সেন্টার অক্সিজেনের এত বেশি দাম নিচ্ছে, যা একদম প্রতারণা। ১ হাজার লিটার অক্সিজেনের জন্য আসলে খরচ হবে মাত্র ৭০ টাকা। অথচ অক্সিজেনের জন্য লাখ টাকার বিলও দেখেছিলাম। এজন্য সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো এসবের মূল্য স্থির করে দিতে হবে। তা না হলে জনগণকে প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করা যাবে না।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, রুমিন ফারহানা এখনো পুরো সুস্থ না, তবুও তিনি প্লাজমা দিতে এসেছেন। এটা চমৎকার ব্যাপার। আমরা গৌরব বোধ করছি রুমিন নিজ থেকে এটা করেছেন। আমরা তার সাথে কোনো যোগাযোগ করিনি। তিনি খুব সজাগ একজন নাগরিক যিনি জনগণের জন্য এতোটাই ভাবেন। রুমিন ফারহানা একটা চমৎকার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।
তিনি বলেন, আমি চাই করোনা থেকে সুস্থ অন্য এমপিরাও প্লাজমা দানে এগিােয় আসবেন। যারা করোনা আক্রান্ত নন তারাও নিয়মিত রক্তদানে এগিয়ে আসতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, দেশে প্লাজমা সংগ্রহ এখনো পর্যাপ্ত না। তাই প্রতিটি করোনা আক্রান্ত মানুষকে প্লাজমা দানে এগিয়ে আসতে হবে। একজন মানুষের প্লাজমা দিয়ে ৫ জন রোগীকে চিকিৎসা দেয়া যায়।
রুমিন ফারহানা বলেন, করোনা লুকিয়ে রাখার বিষয় না। সে কারণে করোনা পজিটিভ জানার সাথে সাথে আমি ফেসবুকে সেটা জানিয়েছি। দেশের সব মিডিয়ার সাংবাদিক ভাইয়েরা সেটা নিয়ে সংবাদ করে সবাইকে জানিয়েছেন। এতে আমার আমার প্রতিবেশী এবং আমার সাথে যাদের যোগাযোগ করার কথা তারা সতর্ক থাকতে পেরেছেন।
তিনি আরও বলেন, করোনার শুরু থেকেই আইসিইউ-ভেন্টিলেটর দূরেই থাকুক সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অক্সিজেনও নেই। প্লাজমা থেরাপির মাধ্যমে রোগীদের যদি আইসিইউ পর্যন্ত যেতে না হয়, বা রেমডিসিভির এর মত দামি ওষুধ নিতে না হয় তাহলে সেটাও অনেক বড় একটা প্রাপ্তি।
আমি বিশ্বাস করি করোনা থেকে সেরে ওঠা প্রতিটা মানুষ যদি অন্য কোনো বড় অসুস্থতায় আক্রান্ত না থেকে থাকেন তাহলে প্লাজমা দেয়া তাদের কর্তব্য। আমি সেই কর্তব্যটিই পালন করতে এসেছি। আমার জেনে খুব ভালো লাগছে এই রক্ত দিয়ে ৫ জন গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগী উপকৃত হবেন।
আমি আশা করি, করোনা থেকে সেরে ওঠা প্রতিটি মানুষ প্লাজমা দেবেন। এই ভয়ঙ্কর মহামারীর সময় সরকার আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি, তাই আমাদের সকলের উচিত নিজেদের পাশে দাঁড়ানো।